RSS

বাবা কখনো এভাবে বলেনি

সময়টা ছিল অক্টোবর ২০০৯ সালের ৭ তারিখ, প্রতিদিনের মতো সকালে বাড়িতে ফোন করে মায়ের সাথে কথা বলল ।
মা - বলল খোকা তুর বাবা বাড়ি আসতে বলে ।
খোকা - না মা এখনো সম্ভব না, কোন প্রস্তুতি নেই বাড়ি যাওয়ার ।

বাবা মায়ের কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে নিল কেড়ে ।

বাবা - খোকা তুই বাড়ি আসবি না ।
খোকা - না, বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নেই ।
বাবা - না, বাড়ি চলে আয় ।
খোকা - এত তাড়া-তাড়ির কি আছে ? আগামী বছর যাব ।
বাবা - না, এ মাসেই চলে আয় । যত তাড়ি-তাড়ি সম্ভব।

খোকার মনটা নরম হয়ে গেল বাবার কথা শুনে, কেন বাবা এমন করে বলতেছে ? বিগত ২ বছর ৬ মাসে কখনো এরকম বলেনি । কিছুক্ষন চুপ থেকে চিন্তা করল ।

খোকা - ঠিক আছে এ মাস শেষ হোক বেতন নিই, তারপর ম্যানেজারকে বলে দেখব ।

বাবা- না, বেতন দিলে না দিলে ও চলে আসবি ।

বাবার কথা শুনে ছেলেটা মন বিগড়ে গেল । কেন বাবা এমন করে বলতেছে ।

ফোনে রেখে সাথে সাথে ম্যানেজারের সাথে কথা হল বাড়ি যাওয়া নিয়ে । বাড়ি যেতে কোন বাঁধা নেই, টিকেটের জন্য বুকিং দিল ২৭ অক্টোবর ২০০৯ ।
সাদা মাটা প্রস্তুতি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য রেড়ি । প্রতিক্ষার প্রহর কবে আসবে ২৭ তারিখ । কাজে তেমন মন বসছে না ।

২৮ তারিখ রাত ১২.০০টায় চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে অবতরণ । সেখানে অপেক্ষা করছে একটা বিষ্ময় । সকল বন্ধুরা বরণ করতে ফুল হাতে দাড়িয়ে রইল । অবাক ! তাড়া হুড় করে তাদেরকে বলিনি যে বাড়ি আসছি । সবাইকে এক সাথে পেয়ে অনেক ভাল লাগল । বাড়ির দিকে রওনা হলাম । পথে যে যার স্থানে বিদায় নিচ্ছে ।

ঘরে যাওয়ার আগে রাস্তা মা দাড়িয়ে রইল । আমাকে জড়িয়ে ধরতে অশ্রু চলে আসল মা'র । কখনো মা-বাবা কে ছেড়ে এতদিন কোথাও ছিল না । মাকে সাথে নিয়ে ঘরে গেল। বাবা খাটের উপর শোয়া, তেমন হাঁটা চলা করতে পারত না । কারণ মাত্র ৬ মাস আগেই ব্রেইন স্টোক করছিল । ছেলেকে দেখেই বসে পড়ল । বাবাকে দেখে কেমন জানি লাগল । কি রকম হয়ে গেছে । শরীরের চামড়া জড়া জড়া হয়ে গেছে । ক্ষীণ হয়ে গেল । বিদেশ পাড়ি দেয়ার আগে অনেক সুস্থ ছিল । বাম হাত বাড়িয়ে দেখাল "কোন শক্তি নেই এই হাতে এবং পায়ে ও" সাথে সাথে কয়েকটা আদেশ দিল যা মেনে চলার জন্য । তখন রাত প্রায় ২টা ।

পরদিন সকালে মা বিয়ের কথা উঠাতেই আমি ছাপ জানিয়ে দিলাম - যা টাকা পয়সা আছে এক মাসের বেশি চলবে না । একমাত্র তোমাদের কারণে চলে আসলাম । মা কে বুঝাতে পারলাম, বাবাকে বুঝানো গেল না ।

বাবার মনে গেঁথে আছে সেই মেয়েটি, যে ছোট বোনের সাথে বেড়াতে এসেছে সে ঈদে । মেয়েটি কে দেখার পর থেকে বাবা বাড়ি যাওয়া জন্য বলতেছে । মায়ের ও অপছন্দ ছিল না । এখন ছেলের মতামতের অপেক্ষা । পরের শুক্রবারে দেখার জন্য তাদের বাড়ি যাচ্ছে । না যাওয়ার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়ে যেতে হল । বাবা রেগে গেল তাই, মা আর বোনেরা বলতেছে রাগের বসে আবার স্টোক হলে কে দায়ী । সন্ধ্যার দিকে দেখতে রওনা, বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলমিটার দূরত্ব । দেখার পর প্রস্থাব ফিরিয়ে দেয়ার মতো কোন ইস্যু পাওয়া গেল না ।

এদিকে দুবাই থেকে দুলাভাই শালার বিয়ে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত । বন্ধুদের সহযোগিতায় বিয়ের কাজ সেরে উঠল ডিসেম্বর ৬, ২০০৯ ।
নভেম্বরের ভিতরে বাবা বিয়ের জন্য তাড়াহুড় করল অনেক । দেরি হওয়াতে বাবা একটু নারাজ ছিল ।

২০ ডিসেম্বর বিয়ের পর প্রথম বেড়াতে যাব বলে রাতে পরিকল্পনা হচ্ছে । সেই সন্ধ্যায় ও সব ঠিক টাক ছিল, মা শীতপিঠা (ভাপা পিঠা) বানোর জন্য চালের গুডা তৈরি করছে । বাবাকে খাওয়া দেয়া হল বারান্দায় । হঠাৎ বাবা না খেয়ে বসে আছে । কি হল বাবা ? কোন খারাপ লাগছে ? নরম আওয়াজে বলল একটু খারাপ লাগছে, বক্ষে ব্যাথা অনুভব করছে । বলতে না বলতে শুয়ে পড়ল । তাড়া-তাড়ি ডাক্তারকে ফোন করলাম । ২/১ টা ঔষুধের নাম বলল দৌড়ে গিয়ে ফার্মেসি থেকে নিয়ে খাওয়ালাম । ২০/৩০ মিনিটে ভাল হয়ে গেল । বাবা ঘুমিয়ে পড়ল । ঘরের সবাই যার যার জায়গায় শুয়ে পড়ল । ঠিক এক ঘন্টা পর বাবার আবার সেই ব্যাথা, তাড়া তাড়ি উঠে দেখলাম সবার চোখে ঘুম লেগে আসল । মা কে ডেকে দিলাম, বাবা কেমন করছে । ডাক্তারকে ফোন করলাম, মেডিকেল নিয়ে যেতে পরামর্শ দিল । কিন্তু বাবা যেতে চাচ্ছেনা ।

সকাল পর্যন্ত বসে রইলাম । বাবা শুধু চট পট করছে । সকালে সব পরিকল্পনা লন্ড বন্ড হয়ে গেল । ডাঃ একবার এসে দেখে গেল, আধা ঘন্টা পর আবার আসবে বলে গেল, আধা ঘন্টা আর লাগেনি । তার আগেই সবচিত্র পাল্ঠে গেল । হঠাৎ কাল বৈশাখী ঝড় আমার মাথার ছাঁদ উড়িয়ে নিয়ে গেল । আমাদের রেখে চলে গেল না ফেরার দেশে । এই চিত্র মনে পড়লে এখনো আমাকে কাদাঁয় । ঘরে নতুন বউ আসাতে বাবা কত না খুশি হল । সে বউ তাকে একটু সেবা করার সময়টুকু দিল না । কেমন করে হতে পারে এটা । তাহার কি আগেই জানা ছিল এভাবে চলে যাবে ? না হলে কেন ছেলেকে বিদেশ থেকে আসতে বলল ? কেনই বা বিয়ের জন্য তাড়া হুড়ো করল ?

৬ ডিসেম্বর যে ঘরে ছিল আনন্দের জোয়ার ১৫ দিনের ব্যবধানে ২১ ডিসেম্বর হয়ে গেল নিস্তব্ধ । যা কল্পনাকেও হার মানায় ।

এটা আমার জীবনের ঘটে যাওয়া বাস্তব কাহিনী ।

দৌড়ালে ওজন কমে না!

ওজন কমানোর জন্য যারা নিয়মিত দৌড়ান তাদের হতাশার সংবাদ রয়েছে। সম্প্রতি একজন ব্রিটিশ গবেষক বলেছেন, 'ওজন কমানোর জন্য দৌড়ান এমন প্রচুর মানুষ কার্যত এ ক্ষোত্রে বড় ধরনের সাফল্য পান না।' গ্রেগ ব্রুকস নামের এই ব্রিটিশ গবেষক জানান, 'চর্বি দেহের সবচেয়ে বড় শক্তির উৎস। দৌড়ালে এই শক্তি খরচ হয় বটে কিন্তু যতটুকু চর্বি খরচ হয়, দেহ তার চেয়ে জমিয়ে রাখে বেশি। নিয়মিত যারা দৌড়ান তাদের স্বাভাবিক খাদ্য তালিকায় চর্বি থাকুক বা না থাকুক দেহ সে খাবার থেকে বেশি বেশি চর্বি জমাতে শুরু করে দেয়।' ব্রুকসের মতে, আমাদের শরীর যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সৰম। দৌড়ানোর মত নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে শরীর তার চাহিদা অনুযায়ী শক্তি সংরৰণ করতে শুরু করে। ফলে বাড়তি মেদ ঝরানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। কেবল তাই নয় ব্রুকস বলেন, আপনি যত বেশি সময় দৌড়াবেন ততবেশি আপনার শরীর শক্তি সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে। অর্থাৎ দৌড়ানোতে তখন ক্যালরি বা খাদ্যশক্তি কম খরচ হবে। ফলে চর্বি খরচ হবে অনেক কম। তাছাড়া দৌড়ানোর ফলে শরীরে অস্থিসন্ধির উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে বলে তিনি জানান। তার মতে, দৌড়ানোর সময় আমাদের শরীরের ওজনের আড়াইগুণ বেশি চাপ পড়ে হাঁটু ও পায়ের অস্থিসন্ধির উপর। এভাবে ক্রমাগত চাপ পড়তে থাকলে হাঁটু ও পায়ের অস্থিসন্ধি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। বর্তমানের জনপ্রিয় মত হলো ব্যায়াম মানুষের বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। ব্রুকস বলেন, ব্যায়াম তা করে বটে কিন্তু দৌড়ানো বা জগিং তার উল্টোটিই করে।

ব্রুকসসহ বহু গবেষক মনে করেন নিয়মিত এক ঘণ্টা হাঁটা এবং শাকসবজি, মাছ, আঁশ জাতীয় খাবার ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করলে ওজন কমবে। শর্করা জাতীয় খাবার অর্থাৎ ভাত, আলু, মিষ্টি, ময়দার রম্নটি ও পরোটা খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে বা কমিয়ে আনতে হবে। চর্বিযুক্ত মাংস, ঘি ও ননীযুক্ত দুধও যথেষ্ট পরিমাণ ওজন বাড়ায়। যারা চা পান করেন দিনে অন্তত তিনবার তারা চা থেকে চিনি বাদ দিতে পারেন। এছাড়া ফাস্টফুড, পেস্ট্রি, কেক ইত্যাদি বেকারি খাবারেও রয়েছে উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এ ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়।

স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যেমন নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুম, চাপ ও স্ট্রেসমুক্ত জীবনযাপন এবং সুষম খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এ ধরনের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে কেবল ওজনই নিয়ন্ত্রণে থাকবে না বরং দীর্ঘায়ু লাভ করা যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।


দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া অবলম্বনে

সুন্দর পুরুষ ও নারীর বুদ্ধি বেশি!

সুদর্শন পুরুষ ও সুন্দরী নারীদের প্রায়ই সুখী জীবনযাপন করতে দেখা যায়। তাঁদের প্রতি ভাগ্য যেন সব সময়ই প্রসন্ন হয়। এর কারণ কী? মানুষের শারীরিক সৌন্দর্য ও মস্তিষ্কের মধ্যে কোথাও কি যোগসাজশ রয়েছে? সুন্দর পুরুষ ও নারীদের বুদ্ধিমত্তা কি অন্যদের তুলনায় বেশি?
এসব প্রশ্নের কিনারা করতে গবেষণার অন্ত নেই। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের পৃথক গবেষণার ফলে দেখা গেছে, শারীরিকভাবে আকর্ষণীয় নারী ও পুরুষদের বুদ্ধিমত্তা আর দশজনের তুলনায় বেশি থাকে। সুদর্শন পুরুষ ও সুন্দরী নারীদের বুদ্ধিমত্তা গড়পড়তা বুদ্ধিমত্তার নর-নারীদের চেয়ে অন্তত ১৪ পয়েন্ট বেশি। এ ক্ষেত্রে পুরুষেরা আবার নারীদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকসের (এলএসই) গবেষণায় বলা হয়েছে, শারীরিক সৌন্দর্যের অধিকারী কোনো পুরুষ কিংবা নারী সাধারণত তাঁদের মতোই সুন্দর ও অনেক ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি বুদ্ধিমত্তার জীবনসঙ্গী বেছে নেন। এ ধরনের দম্পতির ঘরে যে শিশুরা জন্মায়, এরা জিনগত কারণে বাবা-মায়ের শারীরিক সৌন্দর্যের অধিকারী তো হয়ই, সেই সঙ্গে অধিকতর বুদ্ধিমত্তাও পায়।
ব্রিটেনে গবেষণায় পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, শারীরিকভাবে আকর্ষণীয় পুরুষেরা গড়পড়তা বুদ্ধিমত্তার পুরুষদের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। নারীরা রয়েছেন ১১ দশমিক ৪ পয়েন্টে এগিয়ে।
ন্যাশনাল চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডির তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কানাজাওয়া এই গবেষণা সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা চালানো হয় ন্যাশনাল লংজিটুডিনাল স্টাডি অব অ্যাডলসেন্ট হেলথের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে, যেটা ৩৫ হাজার তরুণ আমেরিকানের ওপর গবেষণা চালায়।

ডেইলি মেইল অনলাইন।

ঘুম মানুষকে করে তোলে কমনীয়

মুখের সতেজভাব ও কমনীয়তা রক্ষা করতে অনেকেই ঘুমকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে তাদের এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক। পরিপূর্ণ ঘুম যেমন সুস্থতার চাবি-কাঠি ঠিক তেমনি ঘুম ঠিকমত না হলে শরীরে রোগ বাসা বাধতে পারে। দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম মানুষকে আকর্ষণীয় করে তোলে। ঘুম বঞ্চিত মানুষের চেহারা থেকে কমনীয়তা উবে যায়। চেহারা হয়ে ওঠে রুক্ষ।

সৌন্দর্য্য রক্ষার্থে বিউটি িপের' ধারণা যুগ যুগ ধরে প্রচলিত রয়েছে। আহারের পর নারীরা একটু ঘুমিয়ে নিতে পছন্দ করেন সৌন্দর্য্য রক্ষার খাতিরে। গবেষকরা বলছেন, ঘুম বাস্তাবিকই মানুষকে কমনীয় করে তোলে। গবেষকরা ২৩ জন তরুণ-তরুণীকে নিয়ে এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন। ৮ ঘন্টা ঘুমের পর একবার প্রত্যেকের ছবি তুলেছেন তারা। এরপর স্বেচ্ছাসেবীরা ৩১ ঘন্টা নির্ঘুম ছিলেন, ৩১ ঘন্টা পর আবার তাদের প্রত্যেকের ছবি তোলা হয়। প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীর প্রথম ও দ্বিতীয় ছবি পাশে রাখার পর পার্থক্যটা সহজেই ধরা পড়েছিল। প্রথম আলোকচিত্রটিতে স্বেচ্ছাসেবীদের সতেজ ও কমনীয় দেখাচ্ছিল। ৩১ ঘন্টা জেগে থাকার পর তাদের চেহারার সেই কমনীয়তা হারিয়ে গিয়েছিল। চেহারার এই পরিবর্তন থেকেই বোঝা যায় ঘুম মানুষকে কতটা সতেজ ও সি্নগ্ধ করে তোলে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই গবেষণা সম্পর্কে বিশদ তথ্য তুলে ধরা হয়।

তবে স্টকহোমের কারোলিনস্কা ইন্সটিটিউটের গবেষকদের মতে এই গবেষণায় যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত উপস্থিত করা হয়নি। তাই বিষয়টি সত্য হলেও এখনই তা সর্বজনের স্বীকৃতি পাবে না। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের নিবন্ধে দাবি করা হয় 'ঘুম মানুষকে সুস্থ, ঝরঝরে ও আকর্ষণীয় করে তোলে। অপরদিকে অনিদ্রায় স্বাস্থ্য খারাপ হয়, চেহারা হয়ে উঠে শ্রীহীন। 'যুক্তরাজ্যের সারে পি রিচার্স সেন্টারের গবেষক ড্রেক জেন ডিকা বলেন, 'ঘুম সৌন্দর্য্য রৰায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই গবেষণায় পাওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের জেগে থাকার ছবিগুলো বিশেস্নষন করলেই এটা প্রমাণিত হয়'। তবে যা দেখা গেছে ঘুমের প্রভাব এর চেয়েও বেশি বলে তিনি মনে করেন। তার মতে, 'সারা রাত জাগার পর চেহারা কেমন হয়ে ওঠে তা প্রত্যেকেই অনুধাবন করতে সৰম। এজন্য গবেষণারও তেমন প্রয়োজন নেই। ঢুলু ঢুলুচোখের নিদ্রাক্লান্ত মুখ দেখতে যার ভালো লাগে। তাই নিজেকে ঘুম বঞ্চিত করা চলবে না। নিয়মিত আট ঘন্টা ঘুমান, সুন্দর থাকুন।


বিবিসি অবলম্বনে

সুন্দর দম্পতিদের মেয়ে হয় বেশি

প্রথম বাচ্চাটি কী চান, ছেলে নাকি মেয়ে? কেউবা ছেলে, কেউবা মেয়ে চান। তবে সুন্দর দম্পতিদের জন্য মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনাই নাকি বেশি। সম্প্রতি এক ব্রিটিশ গবেষক এমন তথ্য জানিয়েছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের মনোবিজ্ঞানী ড. শাতোশি কানাজাওয়া দীর্ঘদিন গবেষণার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, যেসব দম্পতি দেখতে সুন্দর ও আকর্ষণীয়, তাদের সন্তান ছেলের চেয়ে মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। তিনি তার এই গবেষণার জন্য ১৭ হাজার ব্রিটিশ শিশুর ওপর নজর রেখেছেন, যাদের কারও কারও জন্ম ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত। এসব শিশুর সৌন্দর্য ও আকর্ষণের ওপর তিনি তাদের বাছাই করেছেন। এসব শিশু যখন পূর্ণবয়স্ক হয়েছে, তখন দেখা গেছে যারা বেশি আকর্ষণীয় তাদের বেশিরভাগ সন্তানই মেয়ে। এই থেকে ড. শাতোশি কানাজাওয়া মনে করছেন সুন্দর দম্পতিদের মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এর বাইরে আরও একটি বিষয় তিনি লক্ষ্য করেছেন। তা হলো, যেসব নারী দেখতে সুন্দর তাদের সম্পর্ক দীর্ঘদিন টিকে থাকে। কারণ পুরুষরা সুন্দর নারীদের সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। অন্যদিকে আকর্ষণীয় পুরুষদের সঙ্গে নারীরা স্থায়ীর বদলে অস্থায়ী এবং স্বল্পমেয়াদে সম্পর্ক গড়ে তুলতেই বেশি আগ্রহী। সেই হিসেবে বলতে হয়, তুলনামূলক কম সুন্দর পুরুষরাই ভাগ্যবান। তবে কেবল পুরুষের চেহারা নয়, যোগ্যতা এবং সামাজিক অবস্থান অবশ্যই একটি বড় ভূমিকা রাখে দাম্পত্য সম্পর্কের বেলায়।
এদিকে সুন্দর নারীরা দাম্পত্য সম্পর্কের বেলায় সুবিধা পায় এবং এই সৌন্দর্য প্রভাব ফেলে তাদের প্রজনন ক্ষমতার ওপর। যার ফলে দেখা যায় তারা মেয়েসন্তান জন্ম দেয় বেশি, এমনটিই মতামত মনোবিজ্ঞানী ড. শাতোশি কানাজাওয়ার।
তবে তার এই মতকে এখনই স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নন অন্যান্য বিজ্ঞানীরা। কারণ দেখা যায়, অনেক সুন্দর দম্পতির শুধুই ছেলেসন্তান। উদাহরণ হিসেবে ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যামের কথা বলতে হয়। তবে এ নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে সেটা বলা যায়।

বিবিসি

মাত্রাতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুদের মানসিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে

শিশুটিকে কোনোভাবেই টেলিভিশনের সামনে থেকে সরানোর উপায় নেই। সারাদিনই কার্টুন নিয়ে পড়ে আছে। স্কুলের সময়টুকু বাদে বাকি সময় ফাঁক পেলেই হয় কার্টুন নয়ত কম্পিউটার গেমস খেলতে বসে যাওয়া। পড়াশোনায় মনোযোগ নেই, ঠিকমতো খাওয়া দাওয়াও করে না। এমন অভিযোগ তাদের সন্তান সম্পর্কে প্রায় অভিভাবকই করে থাকেন। শিশুদের এই প্রবণতা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে। মনোবিদরা সাম্প্রতিক গবেষণার পর জানিয়েছেন, অতিমাত্রায় টেলিভিশন দেখার অভ্যাস শিশুদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক ও আচরণগত সমস্যা তৈরি করে। অভিভাবকদের টিভি রিমোট লুকিয়ে ফেলার কিংবা গেম খেলার কম্পিউটার বা গেমার শিশুদের কাছ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ১০ থেকে ১১ বছর বয়সী হাজার খানেক শিশুর উপর গবেষণা চালিয়ে টেলিভিশন দেখার ক্ষতিকর প্রভাব খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকরা জানান, শিশুরা অতিমাত্রায় টিভি দেখলে বা গেম খেললে, খিটখিটে হয়ে পড়ে, বায়না ধরে মাত্রাতিরিক্ত, অমিশুক হয়ে যায় এবং হাইপার এক্টিভিটি ডিজঅর্ডার বা অতিরিক্ত দুষ্টুমি রোগে আক্রান্ত হয়। এ ধরনের শিশুরা বাড়ির কাজ বা স্কুলের পড়া শেষ করতে পারে না। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ শূন্যের কোঠায় চলে আসে এবং সমবয়সী শিশুদের সাথে সহজভাবে মিশতে পারে না।

গবেষকরা ২৫টি প্রশ্ন সম্বলিত একটি যাচাইপত্র দেন শিশুদের। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেখে তারা নির্ধারণ করেছেন শিশুদের মানসিক অবস্থা কেমন। দেখা গেছে, যেসব শিশু ২ ঘণ্টার উপর টেলিভিশন দেখে তারা প্রশ্নপত্রের উত্তরগুলো লিখতে পারেনি এবং মূল্যায়নে তাদের মান অনেক খারাপ এসেছে। অপরদিকে যারা একদমই টেলিভিশন দেখে না বা কম দেখে তাদের মানসিক স্থিরতার প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। উত্তরপত্রে তারা ভালো নম্বরও পেয়েছে। এমন কী শারীরিক খেলাধুলা করে এমন শিশুরাও অত্যধিক টেলিভিশন দেখার কুপ্রভাব থেকে মুক্ত নয় বলে জানান গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন, যেসব শিশু নিয়মিত খেলাধুলা করে সমবয়সী শিশুদের সাথে মিশতে সক্ষম ও বন্ধুত্ব তৈরি করে তারা মানসিকভাবে অধিকতর সবল। লেখাপড়ায় ও তাদের ভালো করার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।


এএফপি অবলম্বনে

জন্মান্ধকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব

জন্ম থেকেই অন্ধ এমন মানুষকেও অদূর ভবিষ্যতে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি চোখের রেটিনার 'কোনসেল' সফলভাবে ইঁদুরের চোখে প্রতিস্থাপন করেছেন তারা। 'কোনসেল'চোখের মণি বা রেটিনার দু'টি গুরম্নত্বপূর্ণ কোষের একটি।

এ ধরনের কোষ রঙিনবস্তু দেখতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা চারবছর পূর্বে ইঁদুরের চোখে রেটিনার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কোষ 'রডসেল' প্রতিস্থাপন করেন সফলভাবে। রডসেল রডকোষ স্বল্পালোক এবং রাতে দেখার কাজে সাহায্য করে। উলেস্নখ্য, রড ও কোন এই দুই ধরনের কোষ দেখার কাজে প্রধান ভূমিকা রাখে।

বিজ্ঞানীরা জন্মান্ধ ইঁদুরের চোখে এই দুই ধরনের কোষ প্রতিস্থাপনে সফল হওয়ার পর মানুষের অন্ধত্ব মোচনেও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন তারা। এ ধরনের কোষ তৈরি করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা মানব ভ্রুণ ব্যবহার করার কথা ভাবছেন। মানব-ভ্রণ বা হিউম্যান এম্ব্রায়োনিক স্টেম সেল দেহের যেকোনো অঙ্গ সৃষ্টিতে সক্ষম। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম চোখের দিকে একধাপ অগ্রসর হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


এই গবেষনার সাথে যুক্ত ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন বা ইউসিএলের গবেষক জেন সওডেন বলেন, রেটিনায় 'কোনসেল' বা 'কোনকোষের' অনুপস্থিতি বা নষ্ট হয়ে যাওয়া অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ। সওডেন ও তার সহকর্মীরা ইঁদুরের ভ্রুণে এক ধরনের কোষের উপস্থিতি লৰ্য করেন যেগুলো 'কোন' অথবা 'রড' কোষে পরিণত হয়। এ ধরনের কোষের মধ্যে রয়েছে 'কোন রড হোমিবক্স' নামের একটি জিন যা এই দু'টি গুরুত্বপূর্ণ কোষ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ভ্রুণের মধ্য থেকে বিশেষ কোষটি পৃথক করে বিজ্ঞানীরা এর সংখ্যা বৃদ্ধি করেন।

'লেবার কনজিন্যাটাল আমাউরোসিস'নামের ইঁদুরের এক ধরনের জন্মগত অন্ধত্ব দূর করতে বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। অন্ধ ইঁদুরের প্রতিটি চোখের ভেতর ' কোনসেল' তৈরি করে এমন ২ লৰ কোষ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন গবেষকরা। রেটিনার আলোক সংবেদী কোষের ভেতর নতুন এই কোষগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়। ২১ দিন পর নতুন কোষগুলো এক একটি পূর্ণাঙ্গ 'রড' ও 'কোন' কোষের পর নতুন কোষগুলো এক একটি পূর্ণাঙ্গে পরিণত হয়।

নতুন এই গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ম্যাসাচুসেটসের ওরচেস্টারে অবস্থিত অ্যাডভান্সড সেল টেকনোলজির প্রধান গবেষক রর্বাট লণজা। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে চোখের রেটিনায় মানব ভ্রুণ থেকে সফলভাবে রেটিনার কোষ তৈরি হয়েছে। এখন এই গবেষণাও আশার আলো জাগালো। তবে এসবই এখনো খুব প্রাথমিক সত্দরে আছে। অন্ধত্ব দূর করতে যেতে হবে আরো বহুদূর।