RSS

ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি কমায় চা ও কফি


অতিরিক্ত চা বা কফিপায়ীদের জন্য সুখবর। যারা নিয়মিত চা ও কফি পান করেন তাদের মস্তিষ্কে টিউমার হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় কম। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে। পাঁচ লৰাধিক প্রাপ্তবয়স্ক ইউরোপীয় নাগরিকের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৮০ ভাগ ৰেত্রে যে ধরনের ব্রেন টিউমার হয় মানব মস্তিষ্কে সেরকম ব্রেন টিউমারে ঝুঁকি চা ও কফি কমিয়ে দেয়। গ্লিওমাস নামের এ ধরনের ব্রেন টিউমারেই মানুষ আক্রান্ত হয় বেশি। কিন্তু চা ও কফি নিয়মিত পান করলে গ্লিওমাস টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। তবে এই গবেষণা এটা প্রমাণ করে না যে, পানীয় দু'টোর অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে বা এসব পান করলে ব্রেন টিউমারের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ তৈরি হবে। লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের গবেষক ডমিনিখ মিখাউদ বলেন, 'এটা খুব প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণা তাই এই গবেষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ চা ও কফিতে আসক্ত হয়ে উঠলে ভুল হবে।' গবেষকদের মতে, চা ও কফির প্রভাব যদি ব্রেন টিউমারের উপর থাকেও তবে তা অতি নগণ্য। ইউরোপে ব্রেন টিউমারে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। প্রতি এক লাখ ইউরোপবাসীর মধ্যে চার থেকে ছয়জন নারী এবং ছয় থেকে আটজন পুরুষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়। সব মিলিয়ে একজন ইউরোপবাসীর ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এক শতাংশেরও কম। তবে তারপরও যারা খুব বেশি পরিমাণ কফি ও চা পান করেন তাদের ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি কমে যায় বলে জানিয়েছেন গবেষক ডমিনিখ। তিনি বলেন, 'ঠিক কী কারণে ব্রেন ক্যান্সার হয় আমরা জানি না তাই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলাও সম্ভব হয়নি।

আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন নামের গবেষণা সাময়িকীতে এই সংক্রান্ত নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। ৫ লৰ ২১ হাজার ৪৮৮ জন নারী এবং পুরুষের উপর গবেষণা চালিয়ে চা ও কফির নতুন গুণ সম্পর্কে গবেষকরা জানতে পেরেছেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ২৫ থেকে ৭০ বছর। এর মধ্যে চার লৰ ১০ হাজার নারী-পুরুষ ক্যান্সার মুক্ত ছিলেন। প্রায় সাড়ে আট বছর পর ৩৪৩ জন নারী-পুরুষের ব্রেন টিউমার ধরা পড়েছিল। গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের চা ও কফি পানের অভ্যাসের উপর ভিত্তি করে চার থেকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা করেছিলেন। এদের মধ্যে যে দলের সদস্যরা সবচেয়ে বেশি চা ও কফি পান করেছেন তাদের মস্তিষ্কে ক্যান্সার হয়নি। অপরদিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চা, কফি ইত্যাদি পানীয় পানের অভ্যাস তেমন ছিল না।


রয়টার্স অবলম্বনে

পেট ও কোমরের মেদ কমাবে যেসব খাদ্য

পেট ও কোমরের চতুর্দিকে জমে ওঠা মেদ কমাতে অনেকেই দিনের পর দিন উপোস থাকেন। কঠিন ডায়েটের সাথে ব্যায়ামও করেন কেউ কেউ। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে কোমর ও পেটের মেদ কমাতে গিয়ে নিজেকে অভুক্ত না রাখলেও চলে। যথাযথ নিয়ম মেনে সঠিক খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করলে উধাও হবে অনাকাঙ্কিত মেদ। পুষ্টিবিদরা বলছেন, কেবল নির্ভেজাল শর্করা অর্থাৎ ভাত, আলু, ময়দার রুটি ইত্যাদি খাদ্য তালিকা থেকে কমিয়ে সবুজ শাকসবজি ও আমিষ জাতীয় খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। শর্করা বা চর্বি জাতীয় খাবার হজম করতে শরীরের শক্তি কম খরচ হয়। অপরদিকে আমিষ জাতীয় খাবার হজম করতে শরীরের শক্তি খরচ হয় বেশি। ফলে আমিষ বা প্রোটিন খেলে শরীরে জমে থাকা চর্বি কমে যায়। কারণ এই চর্বি শরীরকে শক্তি বা ক্যালরির যোগান দেয়। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা কোমর ও পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে এমন খাবারের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন। তালিকাটি পাঠকের সুবিধার্থে তুলে ধরা হল -

ডিম : আমিষ বা প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিমে রয়েছে অতি প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি-১২। এই সসত্দা ও উপাদেয়া খাবারটি পেট ও কোমরের চর্বির ব্যূহে আঘাত করতে সক্ষম। যারা ডিমের কোলেস্টেরল নিয়ে ভয় করেন তাদের প্রতি চিকিৎসকদের বক্তব্য হল, এই কোলেস্টেরল খুব বেশি মাত্রায় ক্ষতিকর নয়। তারপরও যারা অতি সংবেদনশীল তারা ডিমের কুসুম না খেয়ে। সাদা অংশ খেতে পারেন।

কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার :

সম্প্রতি স্থূলতা বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যেসব নারী নিয়মিত দিনে ৩ থেকে ৪ বার ননীবিহীন দুধ ও চর্বিহীন দই খেয়ে থাকেন তারা নিয়মিত ডায়েট করেন এমন নারীদের তুলনায় ৭০ ভাগ বেশি মেদ কমাতে সৰম হন। চর্বি বা ননীবিহীন দুগ্ধজাত খাবার শরীরে বাড়তি ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে যা দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যেরও সুরক্ষা দেয়।

শিম জাতীয় খাবার : সব ধরনের শিম জাতীয় খাবারে রয়েছে প্রচুর আমিষ, আঁশ ও লৌহ। শিম ও সয়াবিন রান্না করে সবজি হিসেবে খেলে শরীরের অনাবশ্যক চর্বি কমবে।

যব বা ওটমিল : আজকাল শিশুখাদ্য হিসেবে যব বা ওটমিলের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এর কারণ হল যবে রয়েছে প্রচুর আঁশ। এইগুলো শরীরের খারাপ ও দূষিত জিনিষকে বের করে দেয়, পরিপাক যন্ত্র সবল করে এবং মেদ কমায়। যব সেদ্ধ করে মধু ও ননী বিহীন দুধ সহযোগে খাওয়া যায় সকালের নাসত্দার সাথে। এটি শরীরের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বহুক্ষণ ধরে শক্তি যোগায়।

জলপাই তেল বা অলিভ অয়েল:

কিছু কিছু চর্বি আছে যা শরীরের জন্য ভালো। এ ধরনের চর্বির নাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট। জলপাই তেলে এমন উপকারী চর্বি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এ ধরনের চর্বি শরীরের পৰে ৰতিকর চর্বি কমায় এবং হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখে।

অপরিশোধিত শস্য বা হোল গ্রেইন : আটা, ঢেঁকিছাঁটা চাল এসব অপরিশোধিত শস্যে রয়েছে প্রচুর আঁশ এবং খনিজ উপাদান। ময়দার পাউরুটি ও রুটি না খেয়ে লাল আটার রুটি ও পাউরম্নটি খেলে মেদ কমে। তাছাড়া মেশিনে পরিশোধিত সাদা চালের ভাত না খেয়ে ঢেঁকিছাঁটা লাল চালের ভাত বেশি পুষ্টিকর। এ ধরনের ভাতে রয়েছে খনিজ উপাদান এবং প্রোটিন। বিশুদ্ধ শর্করা না খেয়ে এমন অপরিশোধিত শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

মাছ ও মাংস : মুরগি, গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি প্রাণীর মাংসে প্রচুর আমিষ রয়েছে। কিন্তু ভাজা মাংস শরীরের জন্য হিতকর নয়। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ রান্না মাংস খেলে আমিষের ঘাটতি কেটে যায় এবং মেদও কমে, সামুদ্রিক মাছও হতে পারে আমিষের ভালো উৎস। এ ধরনের মাছে উপকারি চর্বি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। মাছ মেদ কমায়, বিষন্নতা দূর করে, হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখে।


দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া অবলম্বনে