যেসব তরুণ দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার কম সময় ঘুমান তাদের মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১৭ থেকে ২৪ বছর বয়সী ২০ হাজার অস্ট্রেলীয় নাগরিকের উপর জরিপ চালিয়ে এই তথ্য জানা গেছে। জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই জরিপ চালায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা পাঁচ ঘণ্টা অথবা তার কম সময় ঘুমান তারা ৮ ও ৯ ঘণ্টা ব্যাপী ঘুমানো মানুষজনের তুলনায় ৩ গুণ বেশি মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। 'পি' নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, যারা পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত হন তারা মানসিক রোগ ছাড়াও হৃদরোগ ও মুটিয়ে যাবার ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। এই গবেষণার প্রধান গবেষক অধ্যাপক লিক গ্লোজিয়ের বলেন, 'একজন তরুণের আদর্শ ঘুমের সময় হচ্ছে দৈনিক ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা।' তবে গত কয়েক দশকে তরুণদের ঘুমের সময়কাল অনেক কমে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে নানা ধরনের বিনোদন মাধ্যম ও ডিজিটাল সামগ্রীকে তিনি এর জন্য দায়ী করেছেন। রাত জেগে টেলিভিশন দেখা, ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া তরুণরা ঘুম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু স্কুল, কলেজ ও অফিসের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিছানাও ছাড়তে হচ্ছে তাদের। ফলে ঘুম পর্যাপ্ত হচ্ছে না বেশিরভাগ তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের। এমন কী যারা ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের স্বাস্থ্যও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের মানুষজন পূর্ণসময় ধরে ঘুমানো মানুষের তুলনায় অধিক মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়। ফলে সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, দক্ষতা হ্রাস পায় এবং স্ট্রেস বেড়ে যায় মাত্রাতিরিক্ত।
ঘুম বঞ্চিত মানুষের মধ্যে বিষণ্নতাজনিত রোগ 'মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার' বা 'বাইপোলার ডিসঅর্ডার' দেখা দেয়। এ ধরনের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়ার পূর্বেই পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন গ্লোজিয়ের। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি, অপরাধ প্রবণতা ও আত্মহত্যার মত ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষজন নিরাময়হীন স্ট্রেসের শিকার হতে পারে। যার ফলে দেখা দিতে পারে হৃদরোগ ও স্থূলতা। এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত হতে রাত জেগে অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার অভ্যাস ত্যাগ করা এবং ইন্টারনেট, মোবাইল ইত্যাদি ডিজিটাল সামগ্রী রাতে ঘুমানোর সময় বন্ধ রাখা জরুরি। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা ও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় কম পান করারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পর্যাপ্ত ঘুম ঝরঝরে স্বাস্থ্য ও মানসিক অবস্থা নিশ্চিত করে। তাই দৈনিক ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানোর বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন গবেষকরা।
এবিসি নিউজ অনলাইন অবলম্বনে
অপর্যাপ্ত ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
এর দ্বারা পোস্ট করা
Mohammed Delwar Hossain
on রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১০
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন