RSS

অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে সব ধরনের এন্টিবায়োটিক

সম্প্রতি ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা এন্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন। তারা আশংকা করছেন ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে পারে পৃথিবীব্যাপী। আর তার ফলে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিপুল প্রাণহানি ঘটবে বিশ্বজুড়ে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের গবেষক অধ্যাপক টিম ওয়ালশ এনডিএম-১ নামের একটি জিন আবিষ্কার করেছেন যা ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে সহজে বাহিত হতে পারে। কোনো ব্যাকটেরিয়া একবার এই জিনের অধিকারী হলে সেটি ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুতে পরিণত হয়। অতি সম্প্রতি 'এসক্লেরেশিয়া কোলাই' ও 'ক্লেবসিলিয়া নিউমোনি' নামের দু'টো জীবাণুতে এ ধরনের জিনের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক 'কার্বাপেনেমস'ও কাজ করে না। 'কার্বাপেনেমসকে' বলা হয় জীবাণুর বিরুদ্ধে মানুষের শেষ অস্ত্র। বিজ্ঞানীদের মতে, এই শেষ অস্ত্রটি অকার্যকর হয়ে উঠার সাথে সাথে মানুষ এন্টিবায়োটিক পরবর্তী যুগে প্রবেশ করল। এর প্রকৃত অর্থ হল নতুন জীবাণুর বিরুদ্ধে এন্টিবায়োটিকের আর কোনো কার্যকারিতা অদূর ভবিষ্যতে নাও থাকতে পারে।


১৯২৮ সালে আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং পেনিসিলিন আবিষ্কারের পূর্বে পৃথিবীর যে পরিস্থিতি ছিল মানুষ আবারো সে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে শুরু করেছে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিজ্ঞানীরা। পেনিসিলিনপূর্ব পৃথিবীতে এপেন্ডিসাইটিসের মত ছোটখাট অপারেশনও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। বিজ্ঞানীদের মতে তেমন পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। ভারতসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অপারেশনের পর রোগীর দেহে এ ধরনের জীবাণুর সংক্রমণ ঘটছে। হাসপাতাল থেকে সংক্রমিত 'হসপিটাল নিউমোনিয়া' বা 'সেপটিসেমিয়াতে' মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ারও অন্যতম কারণ ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া।

ওষুধের বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়াদের এই বিজয়ে বিস্মিত নন অধ্যাপক টিম ওয়ালশ এবং তার সহকর্মীরা। তারা জানান, বিষয়টি বোঝা যাবে ডারউইনের সূত্র থেকে। ডারউইন বলেছেন, 'প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্যই জীব নিজের দেহে পরিবর্তন আনে। এই পরিবর্তনের অব্যাহত ধারাই হল বিবর্তন।' ব্যাকটেরিয়াগুলো সম্প্রতি ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও বিবর্তন কাজ করছে। বিজ্ঞানীদের মতে, জীবমণ্ডলীর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াদের অভিযোজন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। তাই কিছুকাল পরপরই তারা এক একটি এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করে। অর্থাৎ সেসব এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অর্জন করে। সম্প্রতি যে সব ব্যাকটেরিয়াতে 'এনডিএম-১' জিন পাওয়া গেছে তারা কেপিসি নামের এক প্রকার এনজাইম তৈরি করে যার প্রভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী এন্টিবায়োটিকটিও কাজ করে না। এই ক্ষমতা ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে এসেছে বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই। তাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণেই তারা ধীরে ধীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে সব ওষুধের বিরুদ্ধে।

জীবাণুর বিরুদ্ধে মানুষের দীর্ঘস্থায়ী এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াদেরই জয় হবে বলে আশংকা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এর ফলে ভবিষ্যতে যেকোনো আঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপারেশন করা যাবে না কারণ এসব অপারেশনের সময় রোগীকে এমন ওষুধ দেয়া হয় যা দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বিকল্প হিসেবে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয় রোগীকে যা তাকে রক্ষা করে সংক্রমণের হাত থেকে। কিন্তু ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুর আবির্ভাবের ফলে এখন থেকে আর এমন অপারেশনে এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে এপেন্ডিক্স অপারেশনের মত সব ধরনের ছোটখাট অপারেশনও। কারণ তাতে রোগীর সেপটিসেমিয়া হওয়ার আশংকা থাকবে। বৃদ্ধ এবং শিশুদের প্রাণঘাতি নিউমোনিয়ার হাত থেকে রক্ষার কোনো উপায় থাকবে না। এসব রোগে বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ মারা যাবে। গনোরিয়া কিংবা যক্ষা দেখা দিতে পারে মহামারি আকারে। এসব রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ওষুধই থাকবে না মানুষের হাতে।

টাক সমস্যার সমাধানের কাছাকাছি পৌঁছেছে বিজ্ঞান


পুরম্নষের অন্যতম বিড়ম্বনার নাম টাক সমস্যা। টাক ঢাকতে কাঁড়িকাঁড়ি টাকা ঢেলেও স্থায়ী সমাধান পেয়েছেন এমন পুরম্নষের সংখ্যা নগণ্য। বহু কোম্পানি চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাতারাতি টাক মাথায় চুল গজানোর কথা বললেও বাস্তবে এসব প্রলোভন ছাড়া কিছুই নয়। ভুঁইফোঁড় কোম্পানিগুলো এই সুযোগে সহজ সরল টেকো পুরম্নষদের পকেট সাফাই করলেও মাথাভর্তি অকৃত্রিম চুল উপহার দিতে পারেনি। এই অসফলতার পেছনে রয়েছে টাক সমস্যার শারীরতাত্ত্বিক কারণ নির্ণয় না করতে পারা। চিকিৎসা বিজ্ঞান টাক পড়ার প্রক্রিয়াটা জানিয়েই খালাস কিন্তু টাকের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করছে কোন উপাদান তা এতদিন জানা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি একদল মার্কিন বিজ্ঞানী তাদের গবেষণার মাধ্যমে টাক মমস্যার জন্য দায়ী মূল উপাদানটি খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। জিন বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে এই তথ্য বিজ্ঞানীদের পক্ষে জানা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এনজেলা ক্রিস্টিয়ানো এবং তার সহকর্মীরা টাক সৃষ্টির জন্য দায়ী ১৮টি জিনকে চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর বলে জানা গেছে 'ইউএলবিপি' নামের একটি জিন। এই জিনের উপস্থিতিতে শরীরে এক ধরনের অতিরোগ প্রতিরোধী অবস্থা সৃষ্টি হয় যার ফলে শরীরের জীবাণু ধ্বংসকারী কোষগুলো স্বাভাবিক কোষকে আক্রামণ করে বসে। পুরম্নষালি টাক অ্যালোপেশিয়া অ্যারিএটায় আক্রানত্দ প্রায় একশ' জন রোগীর উপর সমীৰা চালিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।

মানবদেহের কয়েক ধরনের রক্তকোষের মধ্যে অন্যতম হল শ্বেত রক্তকণিকা বা হোয়াইট বস্নাড সেল। এই কোষকে খুনি কোষ বা কিলার সেল নামেও অভিহিত করা হয়। শ্বেত রক্তকণিকা শরীরে প্রবেশকারী জীবাণু ধ্বংস করে এবং দেহকে রোগের সংক্রমণ হতে বাঁচায়। কিন্তু টাক বা অ্যালোপেশিয়ায় আক্রানত্দ রোগীদের ক্ষেত্রে শ্বেত রক্তকণিকা ভুলবশত চুলের কোষকে আক্রমণ করে এবং তাদের ধ্বংস করে। 'ইউএলবিপি' জিনের উপস্থিতির কারণে এমনটা ঘটে থাকে। এই জিন শরীরে এমন একটি প্রোটিন তৈরি করে যা শ্বেত রক্তকণিকাকে অতি উদ্দীপিত করার মাধ্যমে টাক সমস্যার জন্ম দেয়।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্ম বিশেষজ্ঞ রড সিনক্লেয়ার বলেন, 'টাক সমস্যা সমাধানে এটি একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। আমরা এতদিন অন্ধের মত হাতড়েছি কিন্তু এখন মূল সত্য উদঘাটন হল। টাক সমস্যার জন্য দায়ী জিনটিকে নির্মূলের মাধ্যমে মাথার হারানো চুল ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব।'
বিবিসি অবলম্বনে

সন্ধিবাত সারাবে মৌমাছি!

আথ্রাইটিস বা সন্ধিবাতের ব্যথায় কাতর যারা তাদের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায়। জানা গেছে, মৌমাছির হুলের বিষ সন্ধিবাত সারাতে সৰম এমন কী তা প্রতিরোধও করতে পারে। ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালিয়ে প্রমাণ পেয়েছেন, মৌমাছির হুলনিসৃত বিষ মারাত্মক ধরনের অস্থিসন্ধির বাত সারিয়ে তুলতে পারে। মৌমাছির বিষ হাঁড়ের সন্ধিস্থলের প্রদাহ রোধ করতে শরীরকে সহায়তা করে। এই বিষ শরীরে প্রবেশ করলে প্রদাহবিরোধী স্বাভাবিক হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায় বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণার ফলাফল সন্ধিবাত ও বাতজ্বরজনিত সন্ধিবাত সারিয়ে তুলতে যথেষ্ট তথ্য যোগাবে। এর ফলে রোগীর ব্যথা যেমন কমানো যাবে তেমনি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে আক্রানত্দ হওয়ার হাত থেকেও রোগীকে বাঁচানো যাবে বলে মনে করছেন তারা।


এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক রিউম্যাটোলজির অধ্যাপক সুজানা বিয়াত্রিচ ভেরিসিমো ডি মেলো বলেন, 'মৌমাছির বিষ শরীরে প্রদাহবিরোধী হরমোন গস্নুকোকর্টিকয়িডসের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।' মেলো ব্যাখ্যা করে বলেন, 'মৌমাছির বিষ শরীরে অ্যালার্জির লৰণ তৈরির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উদ্দীপিত করে তোলে। ফলে এ ধরনের হরমোন বেড়ে যায় যা সন্ধিবাতের প্রদাহ কমিয়ে আনে।

এই গবেষণার আগে থেকেই প্রায় শতাব্দিকাল ধরে সন্ধিবাতের চিকিৎসায় মৌমাছির বিষ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু লোকজ এই চিকিৎসা পদ্ধতির কোনো স্বীকৃতি ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ছিল না। ড. মেলোর গবেষণার পর আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন এই পদ্ধতি প্রয়োগ করবে বলেই ধারণা করছেন সংশিস্নষ্টরা। ডি মেলো বলেন, 'খরগোশের উপর মৌমাছির বিষ প্রয়োগ করে দেখা গেছে তাদের দেহেও গস্নুকোকর্টিকয়িডস বেড়ে যায় এবং সন্ধিবাত নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।' কেবল সন্ধিবাতই নয় মেলো জানাচ্ছেন, হাঁপানি এবং ধমনী শক্ত ও অনমনীয় হয়ে পড়ার রোগ মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসেও মৌমাছির বিষ ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। সেদিন হয়ত আর বেশি দূরে নয় যেদিন মৌমাছির হুলের দর্শন লাভ করতে দলে দলে মানুষ ঢিল ছুড়বে মৌচাকে।

অগোছালো ও এলোমেলো বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস স্বাস্থ্যকর

আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানা গোছাতে ভুলে যান তবে তা নিয়ে খুব একটা আক্ষেপ না করলেও চলবে। আলস্যকে প্রশ্রয় দিয়ে বিছানা গোছানোর কাজটা একেবারেই বাদ দিলেও সমস্যা নেই। কারণ অগোছালো, এলোমেলো বিছানায় ঘুমানো স্বাস্থ্যকর বলে জানা গেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণার পর। এলোমেলো অগোছালো বিছানা দেখতে যেমনই হোক তাতে ঘুমালে অতি ক্ষুদ্র পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। ডাস্ট মাইট নামে পরিচিত এসব পোকা চোখে দেখা না গেলেও এরা আমাদের বিছানায় দিব্যি ঘর সংসার পেতে বসতে পারে। একটি বিছানায় প্রায় ১৫ লক্ষ ডাস্ট মাইট থাকতে পারে যা শ্বাসতন্ত্রের নানা জটিল রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। হাঁপানি, কাশি ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী এসব ক্ষুদ্র পোকা অগোছালো বিছানায় থাকতে পারে না। গোছানো, পরিপাটি বিছানায় আদ্রতা বেশি থাকে বলে সহজেই ধুলার পোকারা সেখানে আখড়া গাড়ে। অপর দিকে অপরিপাটি বিছানা থাকে শুষ্ক ও উষ্ণ। এমন পরিবেশে ভাস্ট মাইট থাকতে পারে না। এক মিলিমিটারের চেয়েও ক্ষুদ্র এসব পোকা ঘুমের সময় আক্রমণ করে। এরা মানুষের ত্বকের আঁশ খায় এবং অ্যালার্জির উপাদান তৈরি করে। ফলে চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির মত রোগ দেখা দেয়।


ভেজা স্যাঁতসেঁতে ভাব ক্ষুদ্র এসব পতঙ্গের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এ নিয়ে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে ক্ষুদ্র পতঙ্গগুলোর জীবনচক্র পর্যবেৰণ করেছেন। কীভাবে পতঙ্গগুলোকে ঘুমানোর স্থান থেকে বিতাড়িত করা যায় তা জেনে নেওয়াটাই ছিল তাদের লৰ্য। গবেষকরা লৰ্য করেছেন এসব বিছানার পোকার দেহের বাহিরের অংশে এক ধরনের গ্রন্থি থাকে। এ গ্রন্থির সাহায্যে পোকাগুলো বাতাস থেকে জলীয়বাষ্প শুষে নেয়। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ড. স্টিফেন প্রেটলভ বলেন, 'বিছানা আদ্রতা থাকলে পোকাগুলো বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতে পারে। বিছানা শুষ্ক থাকলে পোকাগুলো পানি সংগ্রহ করতে পারে না ফলে ধীরে ধীরে পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয়ে তারা মারা যায়।

মানুষের জীবনযাত্রা এসব পোকার উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে তাও জানার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা। যুক্তরাজ্যের প্রায় ৩৬ বাড়ির বিছানায় ডাস্ট মাইটদের কর্মকাণ্ড পর্যবেৰণের জন্য তারা যন্ত্রপাতি লাগিয়েছিলেন। ঘরের তাপমাত্রা, আলোবাতাস, আদর্্রতা ইত্যাদি পোকাদের উপর কেমন প্রভাব ফেলে তারা তা জানতে সৰমও হয়েছেন। এই গবেষণায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন বিজ্ঞানী ড. ম্যাট হলসওয়ার্থ। যুক্তরাজ্যের 'চ্যারিটি অ্যাজমা' নামের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এই গবেষক বলেন, গৃহস্থালীর ডাস্ট মাইট হাঁপানি রোগের বড় কারণ। অথচ এর বিরম্নদ্ধে এখন পর্যনত্দ কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে ঘরের পরিবেশকে এসব পোকামাকড়েরন বসবাসের প্রতিকূল করে তুলতে পারলে ফল পাওয়া যাবে। ঘর যাতে যথেষ্ট উষ্ণ থাকে এবং আদর্্রতা যাতে একেবারেই না থাকে সেদিকেই লৰ্য রাখতে হবে।


বিবিসি অবলম্বনে

স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ১০টি কারণে


বিশ্বজুড়ে স্ট্রোকজনিত মৃত্যুর হার বাড়ছে। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক লোক এই রোগে মৃতু্যবরণ করার পাশাপাশি চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। উলেস্নখ্য, স্ট্রোক মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত একটি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনী ছিঁড়ে যায় এবং রক্তক্ষরণের ফলে রোগীর মৃতু্য হয়। সাধারণত রক্তনালীতে চর্বি জমে সরম্ন হয়ে গেলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। রক্তনালীতে চর্বির সত্দর আরো বেড়ে গেলে এক সময় রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এবং রক্তনালীটি ছিঁড়ে গিয়ে স্ট্রোক হয়। জীবন-যাপন ও খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক রয়েছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে শতকরা ৯০ ভাগ স্ট্রোকের পেছনে কিছু সাধারণ কারণ কাজ করে। এসব কারণ বা ফ্যাক্টর না থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে না। সম্প্রতি কানাডার একটি গবেষণা সংস্থা তাদের গবেষণায় জানতে পেরেছে উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, স্থূলতা (বিশেষ করে পেটের চারপাশে মেদ সঞ্চয়), অকর্মণ্যতা বা আলস্য, মানসিক চাপ ইত্যাদির প্রভাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করে উচ্চ রক্তচাপ ও ধূমপান। উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপারটেনশনে ভুগলে শরীরে নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। উচ্চ রক্তচাপের কারণে রক্তনালীর গায়ে চাপ তৈরি হয়। তার সাথে যদি ধূমপানের অভ্যাস থাকে এবং রক্তনালীতে চর্বি জমে তবে এই তিনের প্রতিক্রিয়ায় স্ট্রোক হতে পারে যে কোনো সময়।

অধিক ওজন, স্থূলতা, স্ট্রেস, খাদ্যাভ্যাস, কর্মহীনতা এবং নিয়মিত ঘুম না হওয়াও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। এসব ঝুঁকি দূর করতে পারলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে।

হ্যামিলটনের ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সেলিম ইউসুফ বলেন, 'উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি করে।' তাছাড়া মেদবহুল শরীর, কর্মহীনতা এবং স্ট্রেসও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বলে তিনি জানান। যাদের স্ট্রোক হয় তাদের সবার রক্তেই চর্বির হার থাকে খুব বেশি। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরলের হার কমাতে হবে। মার্চ ২০০৭ থেকে এপ্রিল ২০১০ পর্যনত্দ প্রায় ২২টি দেশের ৬ হাজার লোকের উপর গবেষণা চালিয়ে গবেষকরা এসব তথ্য পেয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষই স্ট্রোকে আক্রানত্দ হয়েছেন।

দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া অবলম্বনে