শিশুটিকে কোনোভাবেই টেলিভিশনের সামনে থেকে সরানোর উপায় নেই। সারাদিনই কার্টুন নিয়ে পড়ে আছে। স্কুলের সময়টুকু বাদে বাকি সময় ফাঁক পেলেই হয় কার্টুন নয়ত কম্পিউটার গেমস খেলতে বসে যাওয়া। পড়াশোনায় মনোযোগ নেই, ঠিকমতো খাওয়া দাওয়াও করে না। এমন অভিযোগ তাদের সন্তান সম্পর্কে প্রায় অভিভাবকই করে থাকেন। শিশুদের এই প্রবণতা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে। মনোবিদরা সাম্প্রতিক গবেষণার পর জানিয়েছেন, অতিমাত্রায় টেলিভিশন দেখার অভ্যাস শিশুদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক ও আচরণগত সমস্যা তৈরি করে। অভিভাবকদের টিভি রিমোট লুকিয়ে ফেলার কিংবা গেম খেলার কম্পিউটার বা গেমার শিশুদের কাছ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ১০ থেকে ১১ বছর বয়সী হাজার খানেক শিশুর উপর গবেষণা চালিয়ে টেলিভিশন দেখার ক্ষতিকর প্রভাব খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকরা জানান, শিশুরা অতিমাত্রায় টিভি দেখলে বা গেম খেললে, খিটখিটে হয়ে পড়ে, বায়না ধরে মাত্রাতিরিক্ত, অমিশুক হয়ে যায় এবং হাইপার এক্টিভিটি ডিজঅর্ডার বা অতিরিক্ত দুষ্টুমি রোগে আক্রান্ত হয়। এ ধরনের শিশুরা বাড়ির কাজ বা স্কুলের পড়া শেষ করতে পারে না। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ শূন্যের কোঠায় চলে আসে এবং সমবয়সী শিশুদের সাথে সহজভাবে মিশতে পারে না।
গবেষকরা ২৫টি প্রশ্ন সম্বলিত একটি যাচাইপত্র দেন শিশুদের। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেখে তারা নির্ধারণ করেছেন শিশুদের মানসিক অবস্থা কেমন। দেখা গেছে, যেসব শিশু ২ ঘণ্টার উপর টেলিভিশন দেখে তারা প্রশ্নপত্রের উত্তরগুলো লিখতে পারেনি এবং মূল্যায়নে তাদের মান অনেক খারাপ এসেছে। অপরদিকে যারা একদমই টেলিভিশন দেখে না বা কম দেখে তাদের মানসিক স্থিরতার প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। উত্তরপত্রে তারা ভালো নম্বরও পেয়েছে। এমন কী শারীরিক খেলাধুলা করে এমন শিশুরাও অত্যধিক টেলিভিশন দেখার কুপ্রভাব থেকে মুক্ত নয় বলে জানান গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন, যেসব শিশু নিয়মিত খেলাধুলা করে সমবয়সী শিশুদের সাথে মিশতে সক্ষম ও বন্ধুত্ব তৈরি করে তারা মানসিকভাবে অধিকতর সবল। লেখাপড়ায় ও তাদের ভালো করার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
এএফপি অবলম্বনে
মাত্রাতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুদের মানসিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে
এর দ্বারা পোস্ট করা
Mohammed Delwar Hossain
on রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১০
/
Comments: (0)