RSS

জন্মান্ধকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব

জন্ম থেকেই অন্ধ এমন মানুষকেও অদূর ভবিষ্যতে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি চোখের রেটিনার 'কোনসেল' সফলভাবে ইঁদুরের চোখে প্রতিস্থাপন করেছেন তারা। 'কোনসেল'চোখের মণি বা রেটিনার দু'টি গুরম্নত্বপূর্ণ কোষের একটি।

এ ধরনের কোষ রঙিনবস্তু দেখতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা চারবছর পূর্বে ইঁদুরের চোখে রেটিনার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কোষ 'রডসেল' প্রতিস্থাপন করেন সফলভাবে। রডসেল রডকোষ স্বল্পালোক এবং রাতে দেখার কাজে সাহায্য করে। উলেস্নখ্য, রড ও কোন এই দুই ধরনের কোষ দেখার কাজে প্রধান ভূমিকা রাখে।

বিজ্ঞানীরা জন্মান্ধ ইঁদুরের চোখে এই দুই ধরনের কোষ প্রতিস্থাপনে সফল হওয়ার পর মানুষের অন্ধত্ব মোচনেও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন তারা। এ ধরনের কোষ তৈরি করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা মানব ভ্রুণ ব্যবহার করার কথা ভাবছেন। মানব-ভ্রণ বা হিউম্যান এম্ব্রায়োনিক স্টেম সেল দেহের যেকোনো অঙ্গ সৃষ্টিতে সক্ষম। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম চোখের দিকে একধাপ অগ্রসর হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


এই গবেষনার সাথে যুক্ত ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন বা ইউসিএলের গবেষক জেন সওডেন বলেন, রেটিনায় 'কোনসেল' বা 'কোনকোষের' অনুপস্থিতি বা নষ্ট হয়ে যাওয়া অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ। সওডেন ও তার সহকর্মীরা ইঁদুরের ভ্রুণে এক ধরনের কোষের উপস্থিতি লৰ্য করেন যেগুলো 'কোন' অথবা 'রড' কোষে পরিণত হয়। এ ধরনের কোষের মধ্যে রয়েছে 'কোন রড হোমিবক্স' নামের একটি জিন যা এই দু'টি গুরুত্বপূর্ণ কোষ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ভ্রুণের মধ্য থেকে বিশেষ কোষটি পৃথক করে বিজ্ঞানীরা এর সংখ্যা বৃদ্ধি করেন।

'লেবার কনজিন্যাটাল আমাউরোসিস'নামের ইঁদুরের এক ধরনের জন্মগত অন্ধত্ব দূর করতে বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। অন্ধ ইঁদুরের প্রতিটি চোখের ভেতর ' কোনসেল' তৈরি করে এমন ২ লৰ কোষ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন গবেষকরা। রেটিনার আলোক সংবেদী কোষের ভেতর নতুন এই কোষগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়। ২১ দিন পর নতুন কোষগুলো এক একটি পূর্ণাঙ্গ 'রড' ও 'কোন' কোষের পর নতুন কোষগুলো এক একটি পূর্ণাঙ্গে পরিণত হয়।

নতুন এই গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ম্যাসাচুসেটসের ওরচেস্টারে অবস্থিত অ্যাডভান্সড সেল টেকনোলজির প্রধান গবেষক রর্বাট লণজা। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে চোখের রেটিনায় মানব ভ্রুণ থেকে সফলভাবে রেটিনার কোষ তৈরি হয়েছে। এখন এই গবেষণাও আশার আলো জাগালো। তবে এসবই এখনো খুব প্রাথমিক সত্দরে আছে। অন্ধত্ব দূর করতে যেতে হবে আরো বহুদূর।